ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় প্রতারণার অভিযোগে জনতা শপিং সেন্টার মালিকসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক মার্কেট জনতা শপিং সেন্টার মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া পৌরশহরের অন্যতম বাণিজ্যিক মার্কেট জনতা শপিং সেন্টারের মালিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। চুক্তি লঙ্ঘনের মাধ্যমে মার্কেকটির আগেকার ১৭ দোকানীকে ১২বছর যাবত জিন্মি করে রেখেছেন মার্কেট মালিকপক্ষের লোকজন। এ অবস্থার কারণে উল্লেখিত ১৭ ব্যবসায়ী অন্তত তিন কোটি টাকার লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

অভিযোগ উঠেছে, ১২বছর ধরে তাদের নামে চুক্তিবদ্ধ দোকানের প্লট যথাসময়ে বুঝে না দেয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ এসব ব্যবসায়ীরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুরিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু মালিক পক্ষের অসহযোগিতা ও প্রভাবশালী মালিকপক্ষের পরিবারের কয়েকজন প্রশাসনের বড় পদে আসীন থাকার কারণে উল্টো আশ্রয় নিতে গিয়ে চরম হয়রাণির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। বর্তমানে তাঁরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।

এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সর্বশেষ আইনী প্রতিকার চেয়ে অভিযুক্ত জনতা শপিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ও ডেভেলাপমেন্টের মালিকসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দোকানের প্লট বুঝে দিতে এবং ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতিপুরণের অভিযোগে যুগ্ন জেলা জজ (২য়) আদালত কক্সবাজারে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী দোকানদার নুরুল ইসলাম, শহীদুল ইসলাম শহীদ, সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম, হাজী জালাল আহমদ, নুরুল ইসলাম বাবুল, নজরুল ইসলাম মানিক, আবুল হাশেম, ওসমান গনী, নজরুল ইসলাম, ছৈযদ আলম, ওয়াহিদুল আলম, আবুল হাশেম চুনতী, মোজাম্মেল হক, সাইয়িদ আলম, মাহাবুবুর রহমান, ইমাম হোসেন ও রওশন আরা বেগম দাবি করেন,

চকরিয়া পৌরশহরের জনতা মার্কেটের মালিক মরহুম মোজাহের আহমদ কোম্পানী জীবিত থাকাকালে চিরিংগা মৌজার বিএস ২৩৩ নং খতিয়ানের বিএস দাগ নং ৩১২ ও ৩১৩ দাগের উপর নির্মিত নিউ জনতা সুপার মার্কেটের প্রথম তলায় ১৬টি ও ২য় তলায় ৩টিসহ মোট ১৯টি দোকানের সালামী দিয়ে ও দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিবদ্ধ হয়ে দোকানের মালিকানা ক্রয় করেন ওই ১৭জন ব্যবসায়ী।

তারা ওই মার্কেটে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত শান্তিপুর্নভাবে তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্টান পরিচালনা করেন। মোজাহের আহমদ কোম্পানীর মৃত্যুর পর ওই দোকান মালিকরা ফের তার ওয়ারিশদের সাথেও নতুন মার্কেটে প্লট বুঝে পাওয়ার জন্য চুক্তিনামা সম্পাদন করেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, জমির মালিক হাজী মোজাহের আহমদ কোম্পানী মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা মিলে চট্রগ্রামের কাজির দেওয়ারী ভিআই পি টাওয়ারস্থ মদিনা প্রপার্টি ডেভেলাপমেন্ট এর মালিক হাজি মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ, মোসলিম কবির ও মোহাম্মদ আবু ছগিরের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পুর্বের নিউ জনতা সুপার মার্কেট এর স্থলে নতুন জনতা শপিং সেন্টার নির্মানের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে ওই ১৭জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে মরহুম পিতা মোজাহের আহমদ কোম্পানীর সাথে আগের সালামী দিয়ে চুক্তি থাকায় উক্ত চুক্তি মোতাবেক জনতা শপিং সেন্টারের নির্ধারিত ওই সালামির মধ্যেই নতুন মার্কেটে দোকান মালিকদেরকে দোকানঘর বুঝিয়ে দেয়ার শর্তে ওয়ারিশগনের সাথে নতুনভাবে চুক্তিনামা সম্পাদন করেন। উল্লেখিত শর্তাবলী মার্কেট মালিকপক্ষ ও ১৭জন দোকান প্লট গ্রহিতার মধ্যে নোটারী পাবলিক কক্সবাজারের মাধ্যমে লিখিত স্টাম্প চুক্তিনামাপত্রও সম্পাদন করা হয়।

ভুক্তভোগী ১৭ ব্যবসায়ীদের মধ্যে আছেন চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ। তিনি দাবি করেছেন, জনতা শপিং সেন্টারের মালিক ও ডেভেলাপমেন্ট কোম্পানী যৌথভাবে নতুন মার্কেট থেকে ১৯টি দোকান আমাদের (পূর্বের মালিকদের) কাছে হস্তান্তর করার লিখিত চুক্তি রয়েছে। কিন্তু তাঁরা সেটি না করে গত ১২বছর ধরে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের হয়রাণী করে আসছে। এরই জেরে আমরা আইনী প্রতিকার চেয়ে সর্বশেষ গত ১২ ফেব্রুয়ারী অভিযুক্ত জনতা শপিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী ও ডেভেলাপমেন্টের মালিকসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দোকানের প্লট বুঝে দিতে এবং ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার ক্ষতিপুরণের অভিযোগে যুগ্ন জেলা জজ (২য়) আদালত কক্সবাজারে একটি মামলা দায়ের করেছি। বর্তমানে মামলাটি তুলে নিতে প্রভাবশালী মার্কেট মালিকরা আমাদেরকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছেন। এমনকি মার্কেকপক্ষের লোকজন ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদেরকে হয়রাণির চেষ্ঠা করছেন।

পাঠকের মতামত: